Youtube Channel (deshi films)

আপনার কি মন খারাপ? আইজুদ্দিনের মত কষ্টে আছেন? প্রেমিকা/ বউয়ের বকায় অস্থির থাকেন? তবে আর দেরী কেন? ঘুরে আসুন থাইল্যান্ড/সুইজারল্যান্ডে না, আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে। www.youtube.com/deshifilms অথবা উপরের ডান কর্ণারে ইউটিউব বাটনে ক্লিক করুন। সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না।

শুভ্র আর পবিত্রতার প্রতীক অ্যানা ফ্রাংক। আজ তার জন্মদিন।

অ্যানা ফ্র্যাংকের কলমের কালি স্বাক্ষী- মানুষ পৃথিবীর সেরা হিংস্র প্রাণী।



বাবা অটো ফ্র্যাংক অ্যানার ১৩ তম জন্মদিনে একটি লাল- সাদা চেক প্রিন্টের কাপড়ে মোড়ানো ছোট্ট লক লাগানো অটোগ্রাফ খাতা উপহার দেন।
বাবার উপহারটি নিশ্চয়ই অ্যানা হাসিমুখে গ্রহণ করে। কিন্তু কে জানে হাসিমাখা এই খাতাতেই লেখা হবে ইতিহাসের ভয়াবহ দিনগুলির কথা? অ্যানার একাকীত্বের কথা, কারো সাথে কথা না বলতে পারার কথা, ইতিহাসের ভয়ংকর দানবীয় রূপ হলোকস্টের কথা। হ্যা অ্যানার বাবার সেই ছোট্ট অটোগ্রাফের খাতা কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে, সারা বিশ্বের সাড়া জাগানো ইতিহাস হয়ে আছে, সবচেয়ে জনপ্রিয় বইয়ের তালিকায় আছে।

ঘটনা ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত। হলোকস্টের ভয়াবহতার নির্মম পরিহাস অ্যানা ফ্র্যাংক।

অ্যানালিস মারি ‘অ্যানা’ ফ্র্যাংক জন্ম নেন ১৯২৯ সালের ১২ই জুন। তাঁর জন্ম জার্মানীতে, কিন্তু জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে নেদারল্যান্ডস এর আমস্টারডামে। ১৯৩৩ সালে ফ্র্যাংকের পরিবার আমস্টারডামে চলে যায়। ১৯৪১ সাল পর্যন্ত অ্যানা ছিলেন একজন জার্মান। কিন্তু জার্মানির নাৎসি বাহিনীর সেমিটিক বিদ্বেষী নীতির কারনে ১২ বছরের অ্যানা জার্মানির নাগরিকত্ব হারান।১৯৩৩ সালে যখন ফ্র্যাংকের পরিবার নেদারল্যান্ডে চলে যায় সেই বছরেই নাৎসিরা ক্ষমতায় চলে আসে এবং ১৯৪০ সালে তারা আমস্টারডাম দখল করে ফলত ইহুদী ফ্র্যাংক পরিবার সেখানে অন্তরীন হয়ে পরেন। ১৯৪২ সালের দিকে নাৎসি বাহিনীর ইহুদী নিধন বাড়তে থাকে।এমতাবস্থায় অ্যানা ফ্রংকের বাবা অটো ফ্র্যাংকের লুকানো কক্ষে অ্যানিকে লুকিয়ে রাখেন। শুরু হয় তাঁর জীবনের কালো অধ্যায়।



যেই জীবনে পাপ পূণ্যের হিসাবের সময় আসেনি, যেই জীবনের সময়টুকু আদর আর মমতায় রাখার মত, সেই জীবনে ইতিহাসের মানুষের সবচেয়ে নির্মম দিনগুলি তার কাঁচা, শুভ্র মনে দেহে আচঁর কাটতে থাকে। প্রতিদিনকার যন্ত্রণার কথা, রক্তিম অনুভুতির কথা বাবার দেয়া সেই ছোট্ট অটোগ্রাফের খাতায় লিখতে থাকেন পাপমুক্ত ইহুদী এই মেয়েটি। অবশেষে ইশ্বর তাকে জঘণ্যভাবে মুক্ত করেন এই নারকীয় জীবন থেকে ১৯৪৪ সালের অ্যানার বয়সের মতই এক সকালে।
ধরা পরেন নাৎসি বাহিনীর হাতে। তাদেরকে পাঠানো হয় কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে।
অ্যানা ফ্র্যাংক ও তার বোন মার্গট ফ্র্যাংককে বার্গেন-বেলজার কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ১৯৪৫ সালে টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন এই দুই বোন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে পরিবারের একমাত্র বেঁচে যাওয়া হতভাগ্য বাবা অটো ফ্র্যাংক আমস্টারডামে ফিরে এসে অ্যানার ডায়েরিটি খুঁজে বের করেন। অতঃপর তাঁর প্রচেষ্টায় ১৯৪৭ সালে অ্যানির লিখে যাওয়া দিনলিপিটি প্রকাশিত হয়। ডায়েরিটির নাম হয় ডায়েরি অব আ ইয়াং গার্ল নামে। যেখানে অ্যানার জীবনের ১২ জুন ১৯৪২ থেকে ১ আগস্ট ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ফুটে উঠেছে। তার এই বইটি নিয়ে অনেক নাটক আর সিনেমা নির্মিত হয়েছে।


অ্যানা আর বড় হয়নি, কখনো বড় হবেও না। সে থাকবে চির তরুণ, শুভ্র আর পবিত্রতার প্রতীক হয়ে।


লিখেছেন - আলম আশরাফ

No comments

Theme images by merrymoonmary. Powered by Blogger.